

যেকোনো স্থানে সহজে বহনযোগ্য এবং সঙ্গে করে বয়ে বেড়ানোর জন্য উপযোগী ডিভাইসটিই হলো ল্যাপটপ। ল্যাপটপে এই সুবিধা থাকলেও ডেস্কটপের সঙ্গে পার্থক্যও আছে বেশ। ডেস্কটপ পিসি আকারে বড় হবার ফলে বয়ে নেবার অসুবিধা থাকলেও ডেস্কটপ কম্পিউটার কিন্তু ল্যাপটপের চেয়ে ক্ষমতার দিক থেকে বেশি শক্তিশালী হওয়া সম্ভব। তবে, এসব দিক ভাবলেও তর্কের শেষ নেই যে, কোনটি আসলে আমাদের বেছে নেওয়া উচিত। তাই আজকের লিখা ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ কম্পিউটার বিতর্ক নিয়ে -
জার্মান ইলেকট্রিক পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টিইউভি-এর টিম কো-অর্ডিনেটর বার্নড রিপেল জানিয়েছেন, ‘এক স্থানে বসে অনেক কাজ করতে হলে ডেস্কটপ আর কম্পিউটিং-এর প্রয়োজন যদি একই স্থানে সবসময় না হয়, তবে ল্যাপটপ বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। অপরদিকে, কম্পিউটিং শক্তির প্রয়োজনে এবং বেশি সময় ধরে সিস্টেম চালু রাখতে হলে ডেস্কটপই উত্তম।’-সংগৃহীত।
কারও যদি হাই ডেফিনেশন গ্রাফিক্সের কাজ করতে হয় অথবা ভিডিওগ্রাফি করে থাকেন, তবে তার জন্য ল্যাপটপের থেকে উত্তম হলো ডেস্কটপ। কারণ, এ ক্ষেত্রে কিছু ব্যাপার থাকে এমন যে, পরবর্তীতে গ্রাফিকাল কিছু টুলের আপডেট ব্যবহার করতে পিসি আপডেট করা যায় খুব সহজেই। কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, এমনটা করা সম্ভব হয় না। তবে হালকা এবং প্রয়োজনীয় কাজের উপযোগী।
একবাক্যে বলতে গেলে, ‘কম খরচে কাজ করার বেশি ক্ষমতা’—এমন চিন্তা করেও বেছে নেওয়া যায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রটি। তবে পোর্টেবল ডিভাইসের কথা এলে ডেস্কটপের থেকে ল্যাপটপই এগিয়ে।
ক্লাসিকাল ডেস্কটপ বা অল-ইন-ওয়ান উভয় মেশিনের ক্ষেত্রেই, সব প্রযুক্তিই মনিটরের সঙ্গে প্যাক করে রাখা হয়। আর দুই ধরনের মেশিনকেই ডেস্কে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু যারা মেশিন বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-স্বজন সবার সঙ্গেই উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য মোবাইল কম্পিউটারটাই হবে সুবিধাজনক।
দ্রুততর প্রসেসর ভালো, এ কথা সত্যি হলেও কম্পিউটার বেছে নেবার ক্ষেত্রে প্রসেসরের ক্ষমতাই সবকিছু নয়। তবে, কেবল যদি ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং মাইক্রোসফট অফিস প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়, তবে সিপিইউ কেমন হবে, সেটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তবে, ভিডিও এডিটিং-এর কথা মাথায় আনলে অনেক বেশি ক্ষমতার র্যামের প্রয়োজন হবে এবং অনেক দ্রুত এবং অনেক ক্ষমতার হার্ড ড্রাইভ স্টোরেজ প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে বেছে নিতে হবে ডেস্কটপকে।
ল্যাপটপে যদিও গেম খেলা যায়, তবে এ ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স-এর মান কেমন হবে, সেটি বিবেচনায় রাখতে হবে। যেখানে ডেস্কটপের যন্ত্রাংশ সহজেই পরিবর্তন করা যায়, সেখানে ল্যাপটপের যন্ত্রাংশ পাল্টানো বেশ জটিল।
চিপ কম্পিউটার ম্যাগাজিনের টেস্ট এডিটর কৈলাশ বাস্ক জানিয়েছেন, ল্যাপটপে যদি গেম খেলতে হয়, তখন তাতে গ্রাফিক্স কার্ড প্রয়োজন হবে । এই গ্রাফিক্স কার্ড মোবাইল চিপসের জন্য মাঝামাঝি ক্ষমতার হতে হবে। অন্যদিকে, অন্যান্য কাজ করার ক্ষেত্রে শেয়ারড গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে কম্পিউটারের থেকে স্টোরেজ স্পেস বের করে নেবে।
কৈলাশ বাস্কের পরামর্শ হলো, কম্পিউটার কেনার সময় কম্পিউটারের স্বাভাবিক ক্ষমতাকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। এই অর্থে খুব ছোটো আকারের ল্যাপটপ কেনা ঠিক হবে না। তবে, ল্যাপটপে দৈনন্দিন কাজ অনেক আন্দদায়ক হয়ে যাবে যদি ল্যাপটপের স্ক্রিন সাইজ ১৪ ইঞ্চি বা এই মাপের চেয়ে বেশি হয়। ল্যাপটপে কাজ করার সময় ডিসপ্লের ঝাঁকুনি বা নড়াচড়া চোখের ক্ষতি করে ফেলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ডেস্কটপ কম্পিউটারের কন্ট্রাস্ট উচ্চতা অনুসারে কমবেশি করা যায়। এ ছাড়াও ডেস্কটপের সুবিধা হলো, মনিটর সরিয়ে ফেলা বা কিবোর্ড পরিবর্তন করে সহজেই মানিয়ে নেয়া যায়। আর এই সুবিধা ল্যাপটপের ক্ষেত্রে মোটেও নেই। তবে, তর্ক-বিতর্কের এই বেড়াজাল পেরিয়ে ল্যাপটপ, ডেক্সটপ বেছে নেওয়ার সমস্যাটির সমাধান করা সম্ভব প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন