ওজন কমাতে গ্রিন টি |
এক প্রতিবেদনে 'গ্রিন টি' তৈরি কৌশল জানালেন নিউ ইয়র্কের মহিলাদের রেজিস্টার্ড পুষ্টিবিদ ও ডায়েটিশিয়ান কেরি গ্লাসম্যান।
গরম অবস্থায় গ্রিন টি'র ওজন কমানোর ক্ষমতা বাড়ে। তবে পুরোপুরি ফুটানো পানি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিলেন গ্লাসম্যান। তার মতে, পানিতে ছোট ছোট বুদবুদ দেখা দিতে শুরু করলেই নামিয়ে নিতে হবে। এরপর সরাসরি টিব্যাগের উপর পানি ঢেলে ২-৪ মিনিট রেখে দিতে হবে।
তবে ওজন কমাতে 'আইসড গ্রিন টি'ও ব্যবহার করা যাবে।
ফ্লেইভারড গ্রিন টি'ও যথেষ্ট পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এক্ষেত্রে গ্লাসম্যান ক্র্যানবেরি ধরনের গ্রিন টি'র নাম উল্লেখ করে বলেন, "খেয়াল রাখতে হবে, কোনো ফ্লেইভারড গ্রিন টিতে যেন চিনি না থাকে।"
সাধারণ ফ্লেইভারড গ্রিন টি থেকে চিনিযুক্ত ফ্লেইভারড টিতে ক্যালরি বেশি থাকে।
গ্রিন টি থেকে উপকার পেতে চাইলে আলাদা চিনি বা সিরাপ না মেশানোর পরামর্শ দেন এই পুষ্টিবিদ।
প্রাকৃতিকভাবে তৈরি গ্রিন টি কেনার পরামর্শ দিলেন গ্লাসম্যান। এছাড়া পাতার গুণগত মানের ব্যাপারটিও লক্ষ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের গ্রিন টি'র উপরেই এই পুষ্টিবিদের আস্থা বেশি।
তবে চা পছন্দ না হলে গ্রিন টি'র নির্যাসও ব্যবহার করা যাবে। ১ মিলিলিটার গ্রিন টি'র নির্যাস প্রায় ৮ থেকে ১০ কাপ চায়ের সমপরিমাণ পুষ্টিগুণ বহন করে।
==============================================খাঁটি মধু চেনার উপায় কী?
মধু একটি খুব উপকারী খাদ্য, পথ্য ও ঔষধ । মধুর গুণের কথা নতুন করে আর বলার কিছু নেই । জন্মের পর নানা দাদীরা মখে মধু দেয় নাই এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন । আজ আমি মধুর গুণের কথা বলব না । কারণ মধুর গুণের কথা কম বেশী সকলের জানা । বর্তমানে আমরা বাজার থেকে যে মধু কিনে আনি তা যে কতটুকু খাঁটি তা বলা মুশকিল । মধুর মধ্যে সাধারণত ভেজাল হিসেবে পানি, চিনি ও আরও অনেক কিছু মেশানো হয় । চলুন আমরা জেনে খাঁটি মধু চেনার কিছু উপায় -
১। ফ্রিজিং পরীক্ষা : মধুকে ফ্র্রিজের মধ্যে রেখে দিন । খাঁটি মধু জমবে না । ভেজাল মধু পুরাপুরি না জমলেও জমাট তলানী পড়বে ।
২। পিঁপড়া পরীক্ষা : এক টুকরা কাগজের মধ্যে কয়েক ফোঁটা মধু নিন । তারপর যেখানে পিঁপড়া আছে সেখানে রেখে দিন । পিঁপড়া যদি মধুর ধারে কাছে না ঘেসে তবে তা খাঁটি মধু । আর পিঁপড়া যদি তা পছন্দ করে তবে মধুতে ভেজাল আছে ।
৩। চক্ষু পরীক্ষা : খুব অল্প পরিমাণ মধু চোখের ভেতরে দিন । যদি মধু খাঁটি হয় তবে প্রথমে চোখ জ্বালাপোড়া করবে ও চোখ থেকে পানি বের হবে এবং খানিক পরে চোখে ঠান্ডা অনুভূতি হবে । (এই পরীক্ষায় অনুৎসাহিত করছি)
৪। দ্রাব্যতা পরীক্ষা : এক গ্লাস পানি নিয়ে এর মধ্যে এক টেবিল চামচপরিমাণ মধু নিন । খুব ধীরে ধীরে গ্লাসটি শেক করুন । যদি মধু পানিতে পুরাপুরি দ্রবীভূত হয়ে যায় তবে তা ভেজাল মধু । আর মধু যদি পানিতে ছোট ছোট পিন্ডের আকারে থাকে তবে তা খাঁটি মধু ।
৫। মেথিলেটেড স্পিরিট পরীক্ষা : সমান অনুপাতে মধু এবং মেথিলেটেড স্পিরিট মিশ্রিত করে নাড়াতে থাকুন। খাঁটি মধু দ্রবীভুত না হয়ে তলনীতে জমা হবে । আর ভেজাল মধু দ্রবীভূত হয়ে মেথিলেটেড স্পিরিটকে মিল্কি করবে ।
৬। শিখা পরীক্ষা : একটি কটন উয়িক নিয়ে উহার এক প্রান্তকে মধুর মধ্যে ডুবিয়ে নেই । তারপর উঠিয়ে হালকা শেক করে নিই । একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে বা লাইটার জ্বলিয়ে তা আগুনের শিখায় ধরি । যদি তা জ্বলতে থাকে তবে মধু খাঁটি আর যদি না জ্বলে তবে মধুতে পানি মেশানো আছে । যদি মধুতে অল্প পরিমাণ পানি মেশানো থাকে তবে কটন উয়িক জ্বলতে থাকবে কিন্তু ক্র্যাকলিং সাউন্ড শোনা যাবে ।
৭। শোষণ পরীক্ষা : কয়েক ফোঁটা মধু একটি ব্লটিং পেপারে নিন ও পর্যবেক্ষণ করুন । খাঁটি মধু ব্লটিং পেপার কর্তৃক শোষিত হবে না । ভেজাল মধু ব্লটিং পেপারকে আর্দ্র করবে ।
৮। কলংক পরীক্ষা : একটুকরা সাদা কাপড়ের উপর সামান্য পরিমাণ মধু নিন এবং এবং কিছুক্ষন পর কাপড়টি ধৌত করুন । ধোয়ার পর কাপড়টিতে যদি কোন দাগ থাকে তবে মধুতে ভেজাল আছে । আর যদি কোন দাগ না থাকে তবে মধু খাঁটি ।
৯। হানি কম্ব পরীক্ষা : একটি কাঁচের বা সাদা রংয়ের বোলের মধ্যখানে দেড় থেকে দুই চা চামচ (প্লস্টিকের তৈরি) মধু নেই । তারপর বোলের চারদিক দিয়ে ধীরে ধীরে ঠান্ডা পানি ঢালতে থাকি । যখন পানি মধুকে ঢেকে ফেলবে তখন পানি ঢালা বন্ধ করি । তারপর বোলটিকে তুলে ধরে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে দুই মিনিট ধরে ঘুরাতে থাকি । খাঁটি মধু এই মুভমেন্টের পরেও পানিতে দ্রবীভূত হবে না এবং হেক্সাগোনাল আকৃতি ধারণ করবে যা দেখতে প্রায় হানি কম্ব এর মত । হানি কম্ব এর চিত্র দেখুন নিচে -
বার্ধক্য রোধে হরমোন
হরমোন হচ্ছে শক্তিশালী কিছু কেমিক্যাল, যা আমাদের দেহের স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রাখতে সহায়তা করে। আমাদের দেহে প্রাকৃতিকভাবেই হরমোন উৎপন্ন হয় এবং বিভিন্ন উপায়ে দেহে প্রভাব বিস্তার করে।
তবে কিছু কিছু হরমোনের মাত্রা বয়সকালে কমতে থাকে অথবা আমাদের দেহও পর্যাপ্ত হরমোন উৎপন্ন করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। সেসব ক্ষেত্রে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ কতটুকু বিজ্ঞানসম্মত কিংবা ফলদায়ক সেটাই এখানে আলোচনার বিষয়।
বিশেষ কয়েকটি হরমোন যেমনÑ DHEA, গ্রোথ হরমোন, টেস্টোসটেরন, ইস্ট্রোজেন এ ক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। যৌবন ধরে রাখার জন্য কিংবা বয়স পিছিয়ে দেয়ার জন্য বাইরে থেকে এগুলোর ব্যবহার কতটুকু ফলপ্রসূ অথবা এসব হরমোন আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কি-না, তা আজো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাস্তব কথা হচ্ছে, যাদের বেলায় সত্যিকারভাবেই হরমোনের ঘাটতি বা সম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের বেলায় কিছুটা উপকারী হলেও এসব হরমোনের ব্যাপারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। সঠিক মাত্রায় প্রয়োগে দেহ সুস্থ থাকবে, কিন্তু ভুল মাত্রায় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবার দেহে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হরমোনের কার্যকারিতার সাথে কৃত্রিমভাবে প্রয়োগকৃত হরমোনের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করা যাক। দেহের অভ্যন্তরস্থ কোষগুলোর সমষ্টিতে গ্রন্থির সৃষ্টি এবং নালীবিহীন গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোন রক্তে মিশ্রিত হয়ে এবং বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে কাজ করে, কিন্তু কৃত্রিমভাবে দেহে নিঃসৃত হরমোনের মতো নয়। কারণ দেহে হরমোন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নিঃসৃত হয়ে থাকে। আরেকটি পার্থক্য হচ্ছে, প্রয়োগকৃত হরমোন দেহে বেশি মাত্রায় বিরাজ করতে পারে। ফলে নেগেটিভ প্রভাব দেখা দিতে পারে। এমনকি দেহের হরমোনও বিপরীতমুখী প্রভাব সৃষ্টি করে। তাই অল্পমাত্রার এসব রাসায়নিক যৌগ হরমোন দেহ থেকেই নিঃসৃত হোক অথবা বাইরে থেকে প্রয়োগ করা হোক না কেন, এগুলোর ব্যাপক কার্যকারিতা রয়েছে।
প্রথমেই দেহের বৃদ্ধি সাধনকারী হরমোন গ্রোথ হরমোন নিয়ে আলোচনা করা যাক। কারো কারো মতে, এই গ্রোথ হরমোন বার্ধক্যেও লক্ষণগুলো কমাতে ভূমিকা রাখে। যেমন মাংসপেশির বৃদ্ধি এবং চর্বি কমানো এবং দেহে শক্তি ও ভালো লাগা এবং সুস্থ থাকার অনুভূতি সৃষ্টিতে এই হরমোন সহায়ক।
আমাদের মস্তিষ্কে অবস্থিত পিটুইটারি গ্রন্থিকে মাস্টার গ্লান্ডও বলা হয়। তা থেকে নিঃসৃত গ্রোথ হরমোন আমাদের দেহের টিস্যু ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পরিপূর্ণতা নিয়ন্ত্রণের জন্য অতি জরুরি। বিশেষ করে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই গ্রোথ হরমোন বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এর মাত্রা কমে যেতে থাকে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত এই হরমোন ব্যক্তিবিশেষে উপকার নিয়ে আসতে পারে। অনেক সময় শিশুরা অস্বাভাবিকভাবে খাটো হতে পারে যদি তাদের শরীরে এই হরমোন সঠিকভাবে সৃষ্টি না হয়। এসব ক্ষেত্রে বাইরে থেকে প্রয়োগ করলে তা দৈহিক বৃদ্ধি ঘটবে। অন্য দিকে তরুণ বয়সে যদি গ্রোথ হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী পিটুইটারি গ্রন্থি কোনো কারণে টিউমারের জন্য অথবা অন্য কোনো অপারেশনের ফলে ফেলে দিতে হয় তাহলে এই হরমোন আর সৃষ্টি হয় না এবং এসব ক্ষেত্রে মেদবহুল দেহের সৃষ্টি হয়। এসব রোগীর ক্ষেত্রে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ করলে ওজন কমে যাবে।
এখনো রীতিমতো গবেষণা হচ্ছে, এই গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধ বয়সে প্রয়োগের ফলে এ সময়ে তাদের মাংসপেশি শক্তিশালী ও দেহের চর্বি কমানো যায় কি-না। এ ধরনের গবেষণায় রোগীদের আরো বিশেষ পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানে রেখে দেখা হয়েছে যে, এই বয়সে এই হরমোন প্রয়োগে কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস রোগ ত্বকে ও টিস্যুতে পানি টেনে নিয়ে আসাতে ব্লাডক্যান্সার বেড়ে যেতে পারে এবং হার্ট ফেইলিউর হতে পারে, অস্থিসন্ধিতে ব্যথাও হতে পারে। যদিও বিদেশে বহু লোক বার্ধক্য ঠেকাতে অঢেল অর্থ অপচয় করছেন, দেহে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ করছেন কিন্তু ফল খুব আশাপ্রদ নয়।
এবারে টেস্টোসটেরন হরমোন প্রসঙ্গে আলোচনা করা যাকÑ টেস্টোসটেরন হরমোন পুরুষ হরমোন হলেও নারী-পুরুষ উভয়ের দেহে টেস্টোসটেরন উৎপাদিত হয়। পুরুষদের দেহে টেস্টোসটেরন মাত্রা বেশি হওয়াতে পুরুষালি লক্ষণ যেমন কণ্ঠস্বর ভরাট, দাড়ি-গোঁফ গজানো এবং মাংসপেশির প্রশস্ততা ইত্যাদি দেখা দেয়। এই টেস্টোসটেরন হরমোন পুরুষদের যৌন অনুভূতি, চেতনা ও পুরুষাঙ্গের উত্থান ক্ষমতায় বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
বার্ধক্যে টেস্টোসটেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে। তবে বার্ধক্যে যে যৌন দুর্বলতা দেখা দিয়ে থাকে তার সব কারণই কিন্তু টেস্টোসটেরন কমে যাওয়ার জন্য নয়। যেমন কিছু ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস, রক্তনালীর সমস্যা ইত্যাদি আরো কিছু কারণ রয়েছে।
ওষুধ হিসেবে টেস্টোসটেরন ব্যবহার হয়ে আসছে অনেক আগে থেকেই, তবে ব্যবহারের যৌক্তিকতা তাদের জন্যই হওয়া উচিত, যাদের দেহে টেস্টোসটেরনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম রয়েছে অথবা যাদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে হরমোন তৈরি হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, যাদের দেহের মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেছে তা টিউমার অথবা ইনফেকশনের কারণে হতে পারে অথবা টেস্টোসটেরন উৎপাদনকারী অণ্ডকোষ কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অথবা অসুস্থ থাকার কারণেও হতে পারে।
যাদের সত্যিকারভাবেই টেস্টোসটেরনের মাত্রা অপূর্ণতায় রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত টেস্টোসটেরন ওষুধের অনেক উপকারিতা ও কার্যকারিতা রয়েছে। এই হরমোনের অভাবে পুরুষদের মাংসপেশি ও হাড় দিন দিন দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সেই সাথে শুধু এই হরমোনের অভাবে ও স্বল্পতায় যৌন উদ্দীপনা ও আগ্রহ এবং ক্ষমতা এবং বিশেষ করে পুরুষাঙ্গের উত্থান ক্ষমতা কমে যেতে পারে। বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত হরমোন ব্যবহারে এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। কারণ এর ফলে হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা যায়।
তবে সব কিছুরই অতিরিক্ত প্রয়োগ ও ব্যবহার ক্ষতিকর। টেস্টোসটেরনের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতা থাকার পরও এর অতিরিক্ত স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ও টেস্টোসটেরন হরমোনের ব্যবহার মাংসপেশির বৃদ্ধি ও শক্তি বৃদ্ধি ঘটাতে গিয়ে বিতর্কিত ঘটনার অবতারণা হয়েছে।
তাদের বেলায় দেখা গেছে, তাদের বেশির ভাগেরই টেস্টোসটেরন হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে এবং বাইরে থেকে প্রয়োগের ফলে হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেখা যাবে, প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেছে, দেহের চর্বি কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গিয়ে পরবর্তী সময়ে হৃদরোগের সৃষ্টি করতে পারে। বন্ধ্যত্ব ও ব্রণ সমস্যারও বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। যদিও এটা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি যে, বাইরে থেকে অতিরিক্ত টেস্টোসটেরন হরমোন প্রয়োগের ফলে প্রস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সার হতে পারে কি-না।
তাই পরিশেষে বলতে চাই, বার্ধক্য রোধে নিজ থেকে হরমোন প্রয়োগ করা ঠিক নয়। অনেক সময় দেখা যায়, আমাদের দেশে হাতুড়ে ডাক্তার অথবা যারা ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি করেন অথবা সাধারণ এমবিবিএস ডাক্তারও তাদের প্রাত্যহিক প্র্যাকটিস জীবনে যৌনসমস্যা দেখা দিলে যথাযথ হরমোন পরীক্ষা না করে সরাসরি হরমোনের ওষুধ ব্যবহারের কথা বলে থাকেন অথবা ব্যবস্থাপত্র লিখে থাকেন। এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ বার্ধক্যের সব যৌনসমস্যা বা যৌনদুর্বলতার কারণই হরমোনজনিত নয়। কাজেই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আপনার চিকিৎসকই নির্ধারণ করবেন, বার্ধক্যে আপনার হরমোন গ্রহণ কতটুকু প্রয়োজন ও কতটুকু এর উপকারিতা রয়েছে।
কাঁঠালের পুষ্টিগুণ
কাঁঠাল পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। কাঁঠালের বীজ ও কাঁচা
কাঁঠালও পুষ্টিসমৃদ্ধ।
কাঁঠালে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পুষ্টি উপাদান না
থাকলেও সব পুষ্টি উপাদানই আছে।
তবে পাকা কাঁঠালে প্রচুর ভিটামিন-এ আছে। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ
বীজে খুব বেশি। পটাশিয়ামের পরিমাণ কাঁচা কাঁঠাল ও বীজে প্রচুর। সালফারের পরিমাণ বীজে
প্রচুর আছে।
নিম্নে খাদ্যোপযোগী ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠাল, কাঁচা কাঁঠাল ও বীজের পুষ্টিমান দেয়া হলো :
তবে এই পুষ্টিমান কাঁঠালের জাত, উৎপাদনের স্থান, জলবায়ু ইত্যাদি পরিবর্তনের জন্য কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।
তবে কিছু কিছু হরমোনের মাত্রা বয়সকালে কমতে থাকে অথবা আমাদের দেহও পর্যাপ্ত হরমোন উৎপন্ন করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। সেসব ক্ষেত্রে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ কতটুকু বিজ্ঞানসম্মত কিংবা ফলদায়ক সেটাই এখানে আলোচনার বিষয়।
বিশেষ কয়েকটি হরমোন যেমনÑ DHEA, গ্রোথ হরমোন, টেস্টোসটেরন, ইস্ট্রোজেন এ ক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। যৌবন ধরে রাখার জন্য কিংবা বয়স পিছিয়ে দেয়ার জন্য বাইরে থেকে এগুলোর ব্যবহার কতটুকু ফলপ্রসূ অথবা এসব হরমোন আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কি-না, তা আজো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাস্তব কথা হচ্ছে, যাদের বেলায় সত্যিকারভাবেই হরমোনের ঘাটতি বা সম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের বেলায় কিছুটা উপকারী হলেও এসব হরমোনের ব্যাপারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। সঠিক মাত্রায় প্রয়োগে দেহ সুস্থ থাকবে, কিন্তু ভুল মাত্রায় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবার দেহে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হরমোনের কার্যকারিতার সাথে কৃত্রিমভাবে প্রয়োগকৃত হরমোনের পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করা যাক। দেহের অভ্যন্তরস্থ কোষগুলোর সমষ্টিতে গ্রন্থির সৃষ্টি এবং নালীবিহীন গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোন রক্তে মিশ্রিত হয়ে এবং বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে কাজ করে, কিন্তু কৃত্রিমভাবে দেহে নিঃসৃত হরমোনের মতো নয়। কারণ দেহে হরমোন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নিঃসৃত হয়ে থাকে। আরেকটি পার্থক্য হচ্ছে, প্রয়োগকৃত হরমোন দেহে বেশি মাত্রায় বিরাজ করতে পারে। ফলে নেগেটিভ প্রভাব দেখা দিতে পারে। এমনকি দেহের হরমোনও বিপরীতমুখী প্রভাব সৃষ্টি করে। তাই অল্পমাত্রার এসব রাসায়নিক যৌগ হরমোন দেহ থেকেই নিঃসৃত হোক অথবা বাইরে থেকে প্রয়োগ করা হোক না কেন, এগুলোর ব্যাপক কার্যকারিতা রয়েছে।
প্রথমেই দেহের বৃদ্ধি সাধনকারী হরমোন গ্রোথ হরমোন নিয়ে আলোচনা করা যাক। কারো কারো মতে, এই গ্রোথ হরমোন বার্ধক্যেও লক্ষণগুলো কমাতে ভূমিকা রাখে। যেমন মাংসপেশির বৃদ্ধি এবং চর্বি কমানো এবং দেহে শক্তি ও ভালো লাগা এবং সুস্থ থাকার অনুভূতি সৃষ্টিতে এই হরমোন সহায়ক।
আমাদের মস্তিষ্কে অবস্থিত পিটুইটারি গ্রন্থিকে মাস্টার গ্লান্ডও বলা হয়। তা থেকে নিঃসৃত গ্রোথ হরমোন আমাদের দেহের টিস্যু ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পরিপূর্ণতা নিয়ন্ত্রণের জন্য অতি জরুরি। বিশেষ করে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই গ্রোথ হরমোন বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এর মাত্রা কমে যেতে থাকে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত এই হরমোন ব্যক্তিবিশেষে উপকার নিয়ে আসতে পারে। অনেক সময় শিশুরা অস্বাভাবিকভাবে খাটো হতে পারে যদি তাদের শরীরে এই হরমোন সঠিকভাবে সৃষ্টি না হয়। এসব ক্ষেত্রে বাইরে থেকে প্রয়োগ করলে তা দৈহিক বৃদ্ধি ঘটবে। অন্য দিকে তরুণ বয়সে যদি গ্রোথ হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী পিটুইটারি গ্রন্থি কোনো কারণে টিউমারের জন্য অথবা অন্য কোনো অপারেশনের ফলে ফেলে দিতে হয় তাহলে এই হরমোন আর সৃষ্টি হয় না এবং এসব ক্ষেত্রে মেদবহুল দেহের সৃষ্টি হয়। এসব রোগীর ক্ষেত্রে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ করলে ওজন কমে যাবে।
এখনো রীতিমতো গবেষণা হচ্ছে, এই গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধ বয়সে প্রয়োগের ফলে এ সময়ে তাদের মাংসপেশি শক্তিশালী ও দেহের চর্বি কমানো যায় কি-না। এ ধরনের গবেষণায় রোগীদের আরো বিশেষ পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানে রেখে দেখা হয়েছে যে, এই বয়সে এই হরমোন প্রয়োগে কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস রোগ ত্বকে ও টিস্যুতে পানি টেনে নিয়ে আসাতে ব্লাডক্যান্সার বেড়ে যেতে পারে এবং হার্ট ফেইলিউর হতে পারে, অস্থিসন্ধিতে ব্যথাও হতে পারে। যদিও বিদেশে বহু লোক বার্ধক্য ঠেকাতে অঢেল অর্থ অপচয় করছেন, দেহে বাইরে থেকে হরমোন প্রয়োগ করছেন কিন্তু ফল খুব আশাপ্রদ নয়।
এবারে টেস্টোসটেরন হরমোন প্রসঙ্গে আলোচনা করা যাকÑ টেস্টোসটেরন হরমোন পুরুষ হরমোন হলেও নারী-পুরুষ উভয়ের দেহে টেস্টোসটেরন উৎপাদিত হয়। পুরুষদের দেহে টেস্টোসটেরন মাত্রা বেশি হওয়াতে পুরুষালি লক্ষণ যেমন কণ্ঠস্বর ভরাট, দাড়ি-গোঁফ গজানো এবং মাংসপেশির প্রশস্ততা ইত্যাদি দেখা দেয়। এই টেস্টোসটেরন হরমোন পুরুষদের যৌন অনুভূতি, চেতনা ও পুরুষাঙ্গের উত্থান ক্ষমতায় বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
বার্ধক্যে টেস্টোসটেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে। তবে বার্ধক্যে যে যৌন দুর্বলতা দেখা দিয়ে থাকে তার সব কারণই কিন্তু টেস্টোসটেরন কমে যাওয়ার জন্য নয়। যেমন কিছু ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস, রক্তনালীর সমস্যা ইত্যাদি আরো কিছু কারণ রয়েছে।
ওষুধ হিসেবে টেস্টোসটেরন ব্যবহার হয়ে আসছে অনেক আগে থেকেই, তবে ব্যবহারের যৌক্তিকতা তাদের জন্যই হওয়া উচিত, যাদের দেহে টেস্টোসটেরনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম রয়েছে অথবা যাদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে হরমোন তৈরি হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, যাদের দেহের মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেছে তা টিউমার অথবা ইনফেকশনের কারণে হতে পারে অথবা টেস্টোসটেরন উৎপাদনকারী অণ্ডকোষ কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অথবা অসুস্থ থাকার কারণেও হতে পারে।
যাদের সত্যিকারভাবেই টেস্টোসটেরনের মাত্রা অপূর্ণতায় রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত টেস্টোসটেরন ওষুধের অনেক উপকারিতা ও কার্যকারিতা রয়েছে। এই হরমোনের অভাবে পুরুষদের মাংসপেশি ও হাড় দিন দিন দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সেই সাথে শুধু এই হরমোনের অভাবে ও স্বল্পতায় যৌন উদ্দীপনা ও আগ্রহ এবং ক্ষমতা এবং বিশেষ করে পুরুষাঙ্গের উত্থান ক্ষমতা কমে যেতে পারে। বাইরে থেকে প্রয়োগকৃত হরমোন ব্যবহারে এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। কারণ এর ফলে হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা যায়।
তবে সব কিছুরই অতিরিক্ত প্রয়োগ ও ব্যবহার ক্ষতিকর। টেস্টোসটেরনের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতা থাকার পরও এর অতিরিক্ত স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ও টেস্টোসটেরন হরমোনের ব্যবহার মাংসপেশির বৃদ্ধি ও শক্তি বৃদ্ধি ঘটাতে গিয়ে বিতর্কিত ঘটনার অবতারণা হয়েছে।
তাদের বেলায় দেখা গেছে, তাদের বেশির ভাগেরই টেস্টোসটেরন হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে এবং বাইরে থেকে প্রয়োগের ফলে হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেখা যাবে, প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেছে, দেহের চর্বি কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গিয়ে পরবর্তী সময়ে হৃদরোগের সৃষ্টি করতে পারে। বন্ধ্যত্ব ও ব্রণ সমস্যারও বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। যদিও এটা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি যে, বাইরে থেকে অতিরিক্ত টেস্টোসটেরন হরমোন প্রয়োগের ফলে প্রস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সার হতে পারে কি-না।
তাই পরিশেষে বলতে চাই, বার্ধক্য রোধে নিজ থেকে হরমোন প্রয়োগ করা ঠিক নয়। অনেক সময় দেখা যায়, আমাদের দেশে হাতুড়ে ডাক্তার অথবা যারা ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি করেন অথবা সাধারণ এমবিবিএস ডাক্তারও তাদের প্রাত্যহিক প্র্যাকটিস জীবনে যৌনসমস্যা দেখা দিলে যথাযথ হরমোন পরীক্ষা না করে সরাসরি হরমোনের ওষুধ ব্যবহারের কথা বলে থাকেন অথবা ব্যবস্থাপত্র লিখে থাকেন। এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ বার্ধক্যের সব যৌনসমস্যা বা যৌনদুর্বলতার কারণই হরমোনজনিত নয়। কাজেই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আপনার চিকিৎসকই নির্ধারণ করবেন, বার্ধক্যে আপনার হরমোন গ্রহণ কতটুকু প্রয়োজন ও কতটুকু এর উপকারিতা রয়েছে।
তরমুজের পুষ্টিগুণ
ফল অতি উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাদ্য। ফলের মধ্যে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কিন্তু ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ এবং সহজে আত্তীকরণযোগ্য শর্করা অধিক বিদ্যমান থাকায় এগুলো মানুষের পুষ্টিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। ফল রান্না ছাড়া সরাসরি খাওয়া যায় বলে এর পুষ্টি উপাদানগুলো অবিকৃত অবস্থায় আমাদের দেহ কর্তৃক গৃহীত হয়।
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, খাদ্যকে পুষ্টির দিক দিয়ে সুষম করতে হলে দৈনিক প্রত্যেককে গড়ে অন্তত ১১৫ গ্রাম ফল খাওয়া উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে মাথাপিছু দৈনিক ফলের প্রাপ্যতা হচ্ছে মাত্র ৩৮ গ্রাম। সুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদেরকে অধিক ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
বাজারে দেশীয় ফলের পাশাপাশি বিদেশী ফলের ব্যাপক সমারোহ, দামও কম নয়। অথচ পুষ্টিগুণের বিচারে দেখা যায়, দেশীয় ফলগুলো অনেক ক্ষেত্রে বিদেশী ফলের তুলনায় বেশি পুষ্টিমানসমৃদ্ধ। তা ছাড়া দামের বিচারে দেশীয় ফলগুলো বেশ সস্তা। সুতরাং আমাদের দেশীয় ফলের উৎপাদন এবং এর ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন।
তরমুজের রস ও শীতল স্বাদ সবার কাছে আকর্ষণীয়। গরমের তীব্র ও শুষ্ক আবহাওয়ায় মিষ্টি রসে ভরা এই ফল মানুষের দেহমনে তৃপ্তিতে অতুলনীয়। তাই বলা হয়, ‘তরমুজের মধুর রসে সিক্ত করে মন/খাদ্য, পুষ্টি, তৃপ্তি পাবে আরো পাবে ধন’। খাদ্য উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তরমুজে ০.২ গ্রাম প্রোটিন, ৩.৩ গ্রাম শর্করা, ১১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১২ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৭.৯ মিলিগ্রাম লৌহ এবং ৫৭ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন, ০.০২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ ও ১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ থাকে। এ ছাড়া ১৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি রয়েছে। তরমুজ আম কিংবা আনারসের চেয়ে ছয় গুণ, আপেলের চেয়ে আট গুণ এমনকি কমলার চেয়ে ২৬ গুণ বেশি লৌহ রয়েছে। তরমুজের লৌহ শরীরের পক্ষেও বেশি গ্রহণযোগ্য। তা ছাড়া এতে ক্যারোটির (ভিটামিন ‘এ’) পরিমাণ, কলা, আপেল, আঙুর, কমলা, বেল প্রভৃতির চেয়ে বেশি। কেবল পুষ্টিগুণ নয়, তরমুজের কিছু ঔষধিগুণ এবং ব্যবহারিক উপকারিতা রয়েছে।
তরমুজে বিদ্যমান ভিটামিন ‘এ’ শিশুদের রাতকানা ও অন্ধত্ব রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। তরমুজে লৌহ আছে বিধায় রক্তস্বল্পতা রোগ নিরাময়ের জন্য এটি উপকারী। অন্ত্রীয় কাঠিন্য ও ক্ষত সারানোর জন্য তরমুজের রস মহৌষধ। টাইফয়েড রোগীকে তরমুজের রস বার বার খাওয়ালে জ্বরের বেগ কমে যায়। তরমুজের রস কিডনি সবল করতে বেশ সহায়ক। বিজ্ঞানীদের মতে, তরমুজের রস হৃদরোগের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। তরমুজের বিচি বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়। এর বিচি বলকারক ও মূত্রকারক। বিচি গুঁড়ো করে ঠাণ্ডা পানি ও চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে প্রস্রাবের স্বল্পতা ও প্রস্রাবের জ্বালার উপকার পাওয়া যায়।
এখন তরমুজের প্রচুর সমারোহ। তাই দেহের পরিপুষ্টি এবং দেহকে সুস্থ-সবল রাখার জন্য এ সময় বেশি করে তরমুজ খান।
কাঁঠালের পুষ্টিগুণ
কাঁঠালের বিভিন্ন রকম ঔষুধি গুণ রয়েছে। আয়ুর্বেদীয় মতে, মানুষের দেহে কোথাও ফুলে গেলে কাঁঠালের আঠা লাগালে
উপকার হয়। ফোড়ার চার পাশে কাঁঠালের আঠা লাগালে ফোড়া পাকে। নেশাকারীদের কিংবা
ফুডপয়েজনিং হলে বা অন্য কোনো কারণে বমি করানোর প্রয়োজন হলে কাঁঠালের পাতার রস
খাওয়ালে বমি হয়। দাদ একজিমা ও চুলকানি সারানোর জন্য কচিপাতা পানিতে
সিদ্ধ করে খেলে এবং আক্রান্ত স্থানে লাগানো যায়। কাঁচা কাঁঠাল ও বীজ
সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।
কাঁঠালে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
নিম্নে খাদ্যোপযোগী ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠাল, কাঁচা কাঁঠাল ও বীজের পুষ্টিমান দেয়া হলো :
তবে এই পুষ্টিমান কাঁঠালের জাত, উৎপাদনের স্থান, জলবায়ু ইত্যাদি পরিবর্তনের জন্য কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন